হারমোনিয়াম শিক্ষা বই

হারমোনিয়াম দেখতে একটি বাক্সের মতো। বেলোর ব্যবহারে বায়ু নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটি বাজাতে হয়। একটি রিডবোর্ড থাকে এবং ধাতব রিডগুলি সপ্তকের অন্তর্গত স্বরস্থান অনুযায়ী ক্রমোচ পদ্ধতি সাজানো থাকে। বেলোর সাহায্যে চালিত বায়ুশক্তি গিয়ে রিডেন করে এবং তা থেকে ধ্বংস করা হয়। রিড শীর্ষ উপরে থাকে সাদা ও কালো রঙের চিত্র। সাদা পর্দাগুলি সাধারণত শুদ্ধ স্বর এবং কোমল স্বরবর্ণগুলি। তবে স্কেলের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়

হারমোনিয়াম সাধারণত ২ঃ

টেবল হারমোনিয়ামঃ এই প্রকার হারমোনিয়াম উচ্চারণে বড়। টেবলেমোনিয়া মেরে হাপরের ফিট করা এবং ফিতা হার পাদানির দ্বারা যুক্ত থাকে। সেলাই মেশিনের মত দু'পায়ে হাপর দিতে হয়। এই হারমোনিয়া ধ্যামে তিন হতে পাঁচ অক্টেভ পর্যন্ত রীড ও ঐ হিসাবে পর্দা বা চাবি থাকে। সমবেত যন্ত্রসঙ্গীতে ও কোরাস গানে এবং নাট্যগীতাদির আবহ সঙ্গীত ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

বক্স হারমোনিয়ামঃ এই জাতীয় হারমোনিয়াম সাধারণত শব্দসঙ্গীত সাধনায় এবং মাহেলাদিতে ব্যবহার করা হয়। বক্স হারমোনিয়াম সাধারণত "সি থেকে সি" হিসাবে তিন অক্টেভ থাকে। বক্স হারমোনিয়াম সাধারণত দুই প্রকার। পূর্বঃ ১) সিঙ্গেল রিড হারমোনিয়াম ২) ডাবল রিড হারমোনিয়াম।

ব্যবহার পদ্ধতি

হারমোন প্রথম ডায়াটোনিক স্কেল কিন্তু এই যন্ত্রের চাবিগুলি ছিল না বলে নির্দিষ্ট চাবিতে সুর মেলাতে যোগদানের সুযোগ। নাটক শিল্প ভিন্ন ভিন্ন ভিন্ন চিত্রায়ণ সঙ্গীত পরিবেশন করা সম্ভব না। পরে এই অসুবিধা দূর করার জন্য ডায়াটোনিক স্কেলে পরিবর্তন করে যন্ত্র ব্যবস্থা স্বরান্তর (সমান মেজাজের স্কেল)-এ রূপান্তরিত করা হয়। ফলে সাজা চাবিকে ইচ্ছামতো ‘সঙ্গীত পরিবেশন করা সহজ হয়। হারমোনিয়ার একটি স্কেলে বাঁধা নারী পরিবেশের সময় নতুন করে সুরক্ষিত বাঁধতে না হয়। বন্দুক হারমোনিয়ামে কণ্ঠশীলন সহজ হয় এবং সম্ভবত এ কারণে হারমোনিয়াম এ রাজ্যের সামনের দিকে। বর্তমানে এ দেশের কণ্ঠসঙ্গীতে হারমোনিয়াম একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা ব্যাবহূত যন্ত্র। দেশের বিভিন্ন ধরনের হারমোনিয়াম ব্যাবহূত হয়, পরপর: কপলার হারমোনিয়াম, বক্স হারমোনিয়াম, স্কুল চেঞ্জ হারমোনিয়াম, সিঙ্গল বেলো হারমোনিয়াম, ডবল বেলো হারমোনিয়াম ও সাতপাট ইংলিশ বেলো হারমোনিয়াম

যতদূর জানা যায়, প্রথম হারমোনিয়াম ববহূত হয় কলকাতায়। প্রথমশ শতকের ষাটের অবস্থা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর জোড়াসাঁকোতে স্থাপিত সখের থিয়েটারে প্রথম হারমোন বাজান। বাঙ্গালীদের মধ্যে কৌতূহল এবং পরবর্তী প্রস্তুতি ও তার শিক্ষার হারমোনিয়াম ব্যবহার বৃদ্ধি বৃদ্ধি পেতে থাকে। আদর্শ প্রয়োজন মেটানোর জন্য উপযুক্ত গ্রন্থও রচিত হয়। শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুরের হারমোনিয়াম (১৮৭৪) এবং কৃষ্ণধন প্রথম বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারমোনিয়াম শিক্ষা (১৮৯৯) এ বিষয়ে ও প্রধান গ্রন্থ। বইটিতে হার্মোনিয়াম বাদন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আছে