ওহাবী আন্দোলন
About ওহাবী আন্দোলন
Wahhabi movement
প্রথম প্রবন্ধ
কিছুকাল ধরে বাংলার মুসলমানরা সাধারনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ‘পাইওনিয়ার’ পত্রিকার প্রবন্ধগুলো ‘ইংলিশম্যান’ নামক ইংরেজি পত্রিকাই ও ‘দূরবীন’ নামক ফারসি পত্রিকাই পুনরমোদিত হচ্ছে। ‘দূরবীন’ ই মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার্থে কলিকাতাই প্রকাশিত একমাত্র পত্রিকা। আবার ‘দূরবীনে’ জওয়াব হিসেবে প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো ‘পাইওনিয়ার’ ও ‘ইংলিশম্যান’ পত্রিকার মারফত ইউরোপীয় সাধারনের দৃষ্টিগোচরে আসছে।
কিন্তু একদিকে ‘ইংলিশম্যান’ ও মুসলমান পত্রিকাগুলো সরকারকে যেমন চাপ দিচ্ছে মুসলমানদের বর্তমান অবনত অবস্থার উন্নয়নের জন্য ও দেশের প্রতিষ্ঠিত রাজ সরকারে তাদের ন্যায়সঙ্গত অংশ দেওয়ার জন্যে, তেমনিই অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ও এগিয়ে আসছে সাবধান করে দেয়ার জন্য যে, মুসলমানদের মধ্যে এক শ্রেণীর সূচিন্নিত বিদ্রোহী লোক আছে; আর তারা সমগ্র মুসলমান সম্প্রদায়ের কতখানি সহানুভূতি ভোগ করে আজও তা অজানা রয়ে গেছে। ‘হিন্দু পেট্রিয়ট’ পত্রিকাই [দুসরা আগস্ট, ১৮৭০] এই রকম মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে;
“ফারাজী ও ওহাবী মজহাবগুলো নিজেরা বড় রকমের আন্দোলন গড়ে তোলার মত শক্তিশালী না হলেও [আমরা অবশ্য তাও বিশ্বাস করিনে] সদাপ্রস্তুত মূলকেন্দ্র হিসেবে ভয়ংকর প্রতিষ্ঠান, কারণ সেগুলোকে কেন্দ্র করে যতো সব অসন্তোষ, ঘৃণা ও উচ্চাশা পুঞ্জীভূত হয়। আর অনুকূল অবস্থায় সেই সবকে এই বিশাল ও বিভিন্ন সম্প্রদায়সংকুল সম্রাজ্জের হরেক রকম পরস্পরবিরোধী মতাবলম্বীদের থেকে পৃথক করা শক্ত হয়ে পরে। বর্তমান সরকার যতই পারদর্শী ও শুভাকাঙ্ক্ষী হোক, ততোটা বুদ্ধিমান নয় বলেই এসবের সংখ্যা খুব বেড়ে গেছে। আরও দুর্ভাগ্য এই যে, নানারকম নীরব চেষ্টাই তারা বিদেশিকে এদেশে ডেকে আনতে পারে, কিংবা তাদের আসার পথ সুগম করে দিতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের উদ্বেগতা হয়ত বাড়াবাড়ি হতে পারে, কিন্তু আমরা কেমন করে ভুলবো যে, বাংলাদেশে উদ্ভুত হয়েও ফারাজী মজহাবের নাম শোনা যাচ্ছে এমন সব দেশীয় রাজ্যের মধ্যেও, যেখানে তাদের দেখা পাওয়া মোটেও চিন্তা করা যায়না; অথচ সেই সব রাজ্যেও তারা নিজেদের আওতায় ও প্রভাবে পতিত বাশিন্দাদের নিজেদের মত দীক্ষিত করে নিচ্ছে। আর ওহাবীরা তো ছড়িয়ে আছে সাড়া ভারতময়; আমাদের উত্তর- পশ্চিম সীমান্তে ও হায়দ্রাবাদের মতো শক্তিশালী ও সদা উত্তপ্ত মুসলমান রাজ্যেও তাদের সংখ্যা খুবই বেশি। অথচ আমরা আজও জানিনে, তাদের সংখ্যা কত, অবস্থাই বা কি, সম্ভাবনা কি, প্রভাবই বা কতোখানি এবং কারাই বা তাদের নেতা। বাংলাদেশে বিস্তর ফারাজী পল্লী আছে; কিন্তু তাদের সংখ্যা, সংগঠন, রাজনীতি ও ধর্ম আমরা ও সরকারের আজও তিমিরে রয়ে গেছি। এতে দারুণ শৈথল্যই প্রকাশ পায়। ওহাবীরা খুবই বিপিদজনক সম্প্রদায় এবং সারা ইসলামিস্থানে বিস্তৃত, অথচ ফারাজী হল স্থানীয় সম্প্রদায়। ওহাবী আন্দলন জন্ম নিয়েছিল ইসলামের উৎস মূল আরব দেশে এবং বর্তমানে সমগ্র মুসলিম জগতে ছড়িয়ে পড়েছে। ওহাবী প্রচার করা খ্রিস্টান মিসনারির মতোই অসংখ্য ও তেমনই ধর্মনিষ্ঠ, আবার তাদের শিক্ষাও জেসুটদের মতোই বিধর্মী রাজশক্তির বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন। অতএব জেসুটদের মতোই ওহাবীরা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে সক্ষম। বিরুদ্ধবাদী হলেও ওহাবীরা গোঁড়া মতবাদিদের চোখে কোঠর সংযমসীলতার জন্যে স্রদ্ধার পাত্র এবং ওহাবীদের উগ্র ধরমান্তারন দরুন নিজেরা ধর্মীয় সব অনুশাসন পালনে অক্ষমতা- হেতু কিছুটা ধর্মীয় শিথিলতার জন্যেও যেন ওহাবীদের সম্মুখে লজ্জিত। জেসুটদের মতোই ওহাবীদের আছে নিজস্ব সংগঠন; তাদের প্রচারকদিগকেও রীতিমত টাকা পয়সা দেওয়া হয় এবং এই সব টাকা পয়সা আসে সংসারী লোকদের কাছ থেকে আদায়কৃত সাধারণ মূলধন থেকে। ওহাবী সম্প্রদায়ের লোকেরা একটা সুনির্দিষ্ট পথ ঠিক করে নিয়ে সাধারণ জনগনের সাথে মিশে নীরবে কাজ করে যায়। কেউ কেউ দৈনন্দিন বেচা কেনার কাজ করে, কেউবা কখন কাফেরদের আদালতে কেরানীগিরির কাজও করে। কিন্তু কখনো তারা নিজেদের ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য কিংবা রাজনৈতিক লক্ষ্য ভুলে না। তারা অলক্ষে আরও সুচারুভাবে এসব উদ্দেশে কাজ করে যায়। টাকা পয়সার সাহায্য দিয়ে নতুন মতাবলম্বী সংগ্রহ করে এবং দূরের ও নিকটের সহকর্মীদের সাথে নিবিড় সংযোগ রেখে ভারত কিংবা আরবেই হোক জিহাদ পরিচালনা করে। এই আন্দোলনটা নিঃসন্দেহে সবদিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ তার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, পৃথিবীতে ইসলামের রাজনৈতিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করা আর এই উদ্দেশে ইসলামের অনুসারীদের আদিম ইসলামে ফিরিয়ে নিয়ে যেয়ে ধর্মীয় পুনরুজ্জীবিত করা।
What's new in the latest 1.0
ওহাবী আন্দোলন APK معلومات
کے پرانے ورژن ওহাবী আন্দোলন
ওহাবী আন্দোলন 1.0
APKPure ایپکےذریعےانتہائی تیزاورمحفوظڈاؤنلوڈنگ
Android پر XAPK/APK فائلیںانسٹالکرنےکےلیےایککلککریں!