ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধের ইতিহাস - Islamic Story
4.4 and up
Android OS
About ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধের ইতিহাস - Islamic Story
এই অ্যাপটিতে রয়েছে মুুসলিমদের স্বর্নালী যুগের বিভিন্ন যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস ঐতিহ্য
প্রথমেই উল্লেখ করা আবশ্যক যে, রাসূল আগমনের মূল উদ্দেশ্য হ’ল দুনিয়াবাসীকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনানো এবং জাহান্নামের ভয় প্রদর্শন করা। বহুত্ববাদ ত্যাগ করে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী করা ও মানুষের মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা এবং এর মাধ্যমে মানবতার সর্বোত্তম বিকাশ ঘটানো। মক্কাতে রাসূল (ছাঃ) সেই দাওয়াতই শুরু করেছিলেন। কিন্তু আত্মগর্বী কুরায়েশ নেতারা রাসূলের এ দাওয়াতের মধ্যে নিজেদের দুনিয়াবী ক্ষতি বুঝতে পেরে প্রচন্ড বিরোধিতা করল এবং তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করল।
পরে তিনি মদীনায় হিজরত করলেন। কিন্তু সেখানেও তারা লুটতরাজ, হামলা ও নানাবিধ চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চালাতে লাগল। ফলে তাদের হামলা প্রতিরোধের জন্য এবং অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর রাসূলকে যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হয় (হজ্জ ৩৯)। ফলে এটাই প্রমাণিত সত্য যে, হামলাকারীদের প্রতিরোধ ও তাদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য যুদ্ধগুলি সংঘটিত হয়েছিল এবং কোথাও কখনো যুদ্ধের সূচনা মুসলমানদের পক্ষ থেকে হয়নি।
(২) সমস্ত যুদ্ধই ছিল মূলতঃ কুরায়েশদের হিংসা ও অহংকারের ফল। বনু কুরায়েশ, বনু গাত্বফান, বনু সুলায়েম, বনু ছা‘লাবাহ, বনু ফাযারাহ, বনু কেলাব, বনু আযল ও ক্বারাহ, বনু আসাদ, বনু যাকওয়ান, বনু লাহিয়ান, বনু সা‘দ, বনু তামীম, বনু হাওয়াযেন, বনু ছাক্বীফ প্রভৃতি যে গোত্রগুলির সাথে যুদ্ধ হয়েছিল, মূলতঃ এরা সবাই ছিল কুরায়েশদের পিতামহ ইলিয়াস বিন মুযারের বংশধর। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজেও ছিলেন কুরায়েশ বংশের বনু হাশেম গোত্রের।
ফলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এদের যত লড়াই হয়েছে, সবই ছিল মূলতঃ গোত্রীয় হিংসার কারণে। এইসব গোত্রের নেতারা রাসূল (ছাঃ)-এর নেতৃত্ব ও প্রাধান্যকে বরদাশত করতে পারেনি। বদরের যুদ্ধে বনু হাশেম গোত্র চাপের মুখে অন্যান্যদের সাথে থাকলেও তারা রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি। কিন্তু আবু জাহল সহ বাকীরা সবাই ছিল মূলতঃ ইলিয়াস বিন মুযারের বংশধর অন্যান্য গোত্রের।
(৩) রাসূল (ছাঃ)-এর জীবনকালে আরব উপদ্বীপের অন্য কোন গোত্রের সাথে তাঁর কোন যুদ্ধ বা সংঘাত হয়নি। তিনি সারা আরবে লড়াই ছড়িয়ে দেননি।
(৪) রাসূল (ছাঃ)-এর শত্রুতায় ইহুদীরা ছিল কুরায়েশদের সঙ্গে একাত্ম এবং গোপনে চুক্তিবদ্ধ।
(৫) নবুঅতের পুরা সময়কালে একজন লোকও এমন পাওয়া যাবে না, যে ব্যক্তি কেবলমাত্র ধর্মীয় কারণে মুসলমানদের হাতে নিগৃহীত হয়েছে। যতক্ষণ না সে মুসলমানদের উপরে চড়াও হয়েছে, কিংবা ষড়যন্ত্র করেছে। চাই সে মূর্তিপূজারী হৌক বা ইহুদী-নাছারা হৌক বা অগ্নিউপাসক হৌক।
(৬) মুশরিকদের হামলা ঠেকাতে গিয়ে দারিদ্র্য জর্জরিত ও ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর মুসলিম বাহিনী ক্রমে এমন শক্তিশালী এক অপরাজেয় বাহিনীতে পরিণত হয় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় তারা কোন যুদ্ধেই পরাজিত হননি। এমনকি তাঁর মৃত্যুর পরেও খেলাফতে রাশেদাহর যুগে এই বিজয়াভিযান অব্যাহত থাকে। তৎকালীন বিশ্বশক্তি রোমক ও পারসিক শক্তি ঈমানের বলে বলীয়ান মুসলিম বাহিনীর হাতে নাস্তানাবুদ হয়ে যায়।
(৭) রাসূল (ছাঃ) যুদ্ধকে পবিত্র জিহাদে পরিণত করেন। কেননা জিহাদ হ’ল অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। সে যুগের যুদ্ধনীতিতে সকল প্রকার স্বেচ্ছাচার সিদ্ধ ছিল। কিন্তু ইসলামী জিহাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধান কঠোরভাবে অনুসৃত হয়। যা মানবতাকে সর্বদা সমুন্নত রাখে এবং যা প্রতিপক্ষের মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। যে কারণে সারা আরবে ও আরবের বাইরে দ্রুত ইসলাম বিস্তার লাভ করে মূলতঃ তার আদর্শিক ও মানবিক আবেদনের কারণে।
(৮) যুদ্ধবন্দীর উপরে বিজয়ী পক্ষের অধিকার সর্বযুগে স্বীকৃত। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নীতি এক্ষেত্রে নবযুগের সূচনা করে। প্রতিপক্ষ বনু হাওয়াযেন গোত্রের ১৪ জন নেতা ইসলাম কবুল করে এলে তাদের সম্মানে ও অনুরোধে হোনায়েন যুদ্ধের ছয় হাযার যুদ্ধবন্দীর সবাইকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিনা শর্তে মুক্তি দেন। এমনকি বিদায়ের সময়ে তাদের প্রত্যেককে একটি করে মূল্যবান ক্বিবতী চাদর উপহার দেন।
(৯) যুদ্ধরত কাফির বা বিচারে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত কাউকে হত্যা করার বিধান ইসলামে নেই। সেকারণ মাদানী রাষ্ট্রের অধীনে চুক্তিবদ্ধ অসংখ্য অমুসলিম নাগরিক পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে শান্তির সাথে বসবাস করত।
(১০) রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ অর্থাৎ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি বা আদেশ ব্যতীত কাউকে হত্যা করা নিষিদ্ধ ছিল। সেকারণ মক্কা বিজয়ের পূর্বরাতে মক্কার নেতা আবু সুফিয়ান হযরত ওমরের হাতে ধরা পড়া সত্ত্বেও তাঁর হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি ওমর (রাঃ)-এর অটুট আনুগত্য প্রদর্শনের কারণে।
অতএব রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের বাইরে এককভাবে কেউ কাউকে হত্যা বা যখম করতে পারে না। এতে বুঝা যায় যে, জিহাদ ফরয হ’লেও সশস্ত্র জিহাদ পরিচালনার দায়িত্ব এককভাবে মুসলিম সরকারের হাতে ন্যস্ত, পৃথকভাবে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের হাতে নয়।
What's new in the latest 1.2
ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধের ইতিহাস - Islamic Story APK Information
Super Fast and Safe Downloading via APKPure App
One-click to install XAPK/APK files on Android!