Siam Mehraf

২০১৫ সালের জানুয়ারি ১৮, হঠাৎ করেই নিউজফিডে সামনে এলো একটা সুন্দর লেখা। ফেসবুক চালানোটা রীতিমতো চলছিলো ২০১২ থেকেই। কিন্তু শুধুমাত্র কয়েকটা মেসেজ দেখতে কিংবা দিতে। এর বেশি কিছুই না! ওই সুন্দর লেখাটা পুরোটা পড়তে সেদিন আমার সময় লেগেছিলো ৩০ মিনিট। তখনো আমার ফেসবুকে লেখা পড়ার মতো অভ্যাস ছিলোনা খুব একটা। ৩০ মিনিটে লেখাটা শেষ করে একটা দীর্ঘশ্বাস নিলাম। ভেবে দেখলাম, ফেসবুকটা চাইলেই কতো ভালো কাজে ব্যবহার করা যায়! ওইদিন সিদ্ধান্ত নিলাম, আমিও লিখবো। ব্যাস! ওখান থেকেই শুরু। আর থেমে থাকিনি। যদিও অনেক কাঠখড় পোহানোর গল্প রয়েছে মাঝখানে। সেসবে আর নাইবা গেলাম! লেখালিখির শুরুটা ওভাবেই হয়েছিলো আমার।

আস্তে আস্তে মানুষের কাছে পৌঁছাতে শুরু করে লেখাগুলো। মানুষেরা অনেক ভালোবাসা দিতে শুরু করে। এভাবেই নিজের ইচ্ছাটাকে মানুষের ভালোবাসার বস্তু হতে দেখেছি। ব্যাপারটা ভীষণ শান্তির। কারণ, লেখে অনেকেই, কিন্তু ভালোবাসা পাওয়ার মতো যোগ্যতা সবার থাকেনা। আসলে যোগ্যতা বলাটা ভুল, ভাগ্য বলাটাই শ্রেয় হবে বোধয়!

তবে ওখানেই থেমে ছিলাম না। বিভিন্ন রকমের স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতাম। নতুন নতুন জিনিস করতে ভালোবাসতাম। ২০১৫ সাল পুরোটা জুড়ে লেখালিখির বাইরে কিছু নিয়েই ভাবিনি।

বিপত্তি ঘটে ২০১৬ তে এসে। নতুন নতুন তখন ইউটিউব জিনিসটা ভালোভাবে চিনতে শিখি। বেশ আগ্রহ জন্মালো! এরপরে দেখলাম, ওখানেও ভিডিও বানানো যায়। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করা যায়! কি দারুন ব্যাপার! কিন্তু তখন না ছিলো কোন সামান্যতম আইডিয়া, বা কোন এমন কিছু যা দিয়ে আমি কোন ভিডিও বানাতে পারি।

এসব ভাবতে ভাবতে এক ছোট ভাইয়ের সহায়তায় ভিডিও বানিয়েই ফেলি একটা। যেটা ছিলো আমার বাবাকে কেন্দ্র করে। ইউটিউবে ভিডিওটা আপলোড করেছিলাম ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৬, নাম দিয়েছিলাম "দ্য ডিফারেন্ট ভ্যালেন্টাইন" কারণটা তো আগেই বলেছি! ওটা আমার বাবাকে উদ্দেশ্য করে ছিলো!

কিন্তু এরপরে ব্যস্ততা এবং পড়াশুনা এর কারণে কিছুই আর করা হয়ে উঠেনি। কিন্তু ওটা মন থেকে মুছে যায়নি আমার তবুও!

আমি ভেবেছিলাম, আমি লিখতে পারি কিছুটা হলেও! মানুষ ভালোবাসছে আমার লেখাগুলো! তবে কেনো আমি এগুলোকে তাদের সামনে ভিডিও আকারে তুলে ধরবো না! কিন্তু এতোকিছু ভাবার পরেও সুযোগটা ছিলোনা।

২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এভাবেই কেটে যায়! টানা তিনবছর নিজের স্বপ্নকে পুরণ করার জন্য আমি কোন রাস্তাই খুঁজে পাইনি। খুঁজে পেলেও বিভিন্ন ঝামেলা এসে থামিয়ে দিয়েছে আমাকে মাঝপথেই! আস্তে আস্তে আশাটা ছাড়তেই বসেছিলাম কেবল! কিন্তু হুট করেই নিভু নিভু করা আশাটাতে, আলো জ্বলে উঠে।

সালটা ২০১৯। প্রথম রোজার দিন। আমার শ্রদ্ধেয় এক বড় ভাই, আমাকে উপহার দেয় আমার সেই কাঙ্গিত বস্তু‌, যেটা হলে আমি ছুঁতে পারবো আমার স্বপ্ন! ব্যাস! আর কে পায় আমাকে! নিজের লেখাগুলোকে বাস্তবে রুপদান দিতে শুরু করি আস্তে আস্তে।

নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ভাবি কিভাবে কোন লাইনটা লিখলে মানুষ পছন্দ করবে, কিভাবে কোন লাইনটার ভিডিও শট নিলে দেখতে ভালো লাগবে। কেবল এসবই! আর দেখতে দেখতে হয়ে যায় একগাদা ভিডিও। আর সেই একগাদা ভিডিওর সাথে জুড়ে আছে আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের স্নেহ, শ্রদ্ধা, মমতা, সম্মান, সবকিছুই।

স্বপ্ন অধিক থাকার পরেও লেখালিখি কখনো ছাড়িনি। ছাড়িনি মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার নেশা।

উপরের গল্পগুলোর মাঝখানের বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে বিভিন্ন দূর্ঘটনা। হারিয়েছি অনেক মানুষ। হারিয়েছি ভালোবাসা। কত শত ঝড় পেরিয়েছি! সেসবের গল্প এখন না!

তবে গল্পটা এখানেই থেমে থাকবে না! যতদিন আছি গল্পটা চলবে। হয়তো ধীর গতিতে এগোবে, নয়ত খুব দ্রুত।

আর মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার নেশাটা চলতেই থাকবে আজীবন। এভাবেই!

সবশেষে ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি মহান আল্লাহর কাছে, যার ইচ্ছাতেই পেয়েছি আপনাদের নিকটে যাবার, আপনাদের ভালোবাসা পাওয়ার কোন এক রাস্তা।

এটাই ছিলো একটা "স্বপ্নচারী'র" গল্প!